আমার এ জন্মদিন (Amar E Jonmodin) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষলেখা (১৯৪১) কাব্যগ্রন্থের একটি আবেগঘন ও আত্মঅনুসন্ধানী কবিতা। এখানে কবি জীবনের শেষপ্রান্তে এসে নিজের জন্মদিন উপলক্ষে বন্ধু, প্রিয়জন ও মানবিক স্নেহের প্রতি গভীর টান প্রকাশ করেছেন। জীবনের সমস্ত কিছু বিলিয়ে দেওয়ার পর, বিদায়ের আগে তিনি প্রার্থনা করছেন মানুষের স্নেহ ও ক্ষমার শেষ দান।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: শেষলেখা
কবিতার নাম: আমার এ জন্মদিন
প্রকাশকাল: ১৯৪১
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: আত্মজীবনীমূলক অনুভূতি, বিদায়ের মনোভাব, মানবিক সম্পর্ক
আমার এ জন্মদিন – কবিতার পাঠ
আমার এ জন্মদিন-মাঝে আমি হারা
আমি চাহি বন্ধুজন যারা
তাহাদের হাতের পরশে
মর্ত্যের অন্তিম প্রীতিরসে
নিয়ে যাব জীবনের চরম প্রসাদ,
নিয়ে যাব মানুষের শেষ আশীর্বাদ।
শূন্য ঝুলি আজিকে আমার;
দিয়েছি উজাড় করি
যাহা-কিছু আছিল দিবার,
প্রতিদানে যদি কিছু পাই
কিছু স্নেহ, কিছু ক্ষমা
তবে তাহা সঙ্গে নিয়ে যাই
পারের খেয়ায় যাব যবে
ভাষাহীন শেষের উৎসবে।
ভাবার্থ
কবি জীবনের শেষ জন্মদিনে নিজেকে শূন্য মনে করছেন, কারণ তিনি জীবনের সবকিছু মানবকল্যাণে উজাড় করে দিয়েছেন। এখন বিদায়ের আগে তিনি কেবল প্রিয়জনের স্নেহ ও ক্ষমা চাইছেন। এই স্নেহ হবে তার জীবনের সর্বশেষ সম্পদ, যা তিনি পারের খেয়ায় তুলে নিয়ে যাবেন অনন্তের দিকে। এখানে “ভাষাহীন শেষের উৎসব” দ্বারা মৃত্যুর নীরব যাত্রাকে বোঝানো হয়েছে।
শব্দার্থ
পারের খেয়া: মৃত্যুর পর অনন্তে যাওয়ার প্রতীকী নৌকা।
ভাষাহীন উৎসব: নীরব বিদায়ের মুহূর্ত, মৃত্যু।
উজাড় করা: নিঃশেষে বিলিয়ে দেওয়া।