ওই মহামানব আসে (Oi Mohamanob Ase) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষলেখা কাব্যগ্রন্থের একটি অনুপ্রেরণামূলক ও গভীর প্রতীকধর্মী কবিতা। এখানে কবি এক মহান ব্যক্তিত্বের আগমনের মাধ্যমে মানবজাতির নবজাগরণ, আশা এবং মুক্তির বার্তা ঘোষণা করেছেন। মহামানবের উপস্থিতি প্রকৃতি ও মানবমনে একসাথে উদ্দীপনা, ভরসা এবং বিজয়ের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: শেষলেখা
কবিতার নাম: ওই মহামানব আসে
প্রকাশকাল: ১৯৪১
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: অনুপ্রেরণা, নবজাগরণ, মানবমুক্তি
ওই মহামানব আসে – কবিতার পাঠ
ঐ মহামানব আসে;
দিকে দিকে রোমাঞ্চ লাগে
মর্ত্যধূলির ঘাসে ঘাসে।
সুরলোকে বেজে উঠে শঙ্খ,
নরলোকে বাজে জয়ডঙ্ক–
এল মহাজন্মের লগ্ন।
আজি অমারাত্রির দুর্গতোরণ যত
ধূলিতলে হয়ে গেল ভগ্ন।
উদয়শিখরে জাগে মাভৈঃ মাভৈঃ রব
নব জীবনের আশ্বাসে।
জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়,
মন্দ্রি উঠিল মহাকাশে।
ভাবার্থ
এই কবিতায় রবীন্দ্রনাথ একটি মহান ব্যক্তির আবির্ভাবকে মানব সভ্যতার পুনর্জাগরণের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তাঁর আগমনে মানুষ নতুন উদ্যমে জেগে ওঠে, ভয় দূর হয়, এবং জীবনের নতুন পথচলার আহ্বান শোনা যায়। কবি বিজয়ের শঙ্খধ্বনি ও আনন্দোল্লাসের মাধ্যমে ভবিষ্যতের আলোকোজ্জ্বল সময়ের পূর্বাভাস দিয়েছেন।
শব্দার্থ
মহামানব: মহান ও অসাধারণ গুণসম্পন্ন মানুষ।
জয়ডঙ্ক: বিজয়ের ঢাক বা তূর্যধ্বনি।
মাভৈঃ: ভয় করো না (সংস্কৃত থেকে গৃহীত)।
অভ্যুদয়: উন্নতি বা উত্থান।
মন্দ্রি: ধ্বনিত বা প্রতিধ্বনিত হওয়া।