ও আমার মন যখন জাগলি না রে (O Amar Mon Jokhon Jagli Na Re) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতালি (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থের একটি অন্তর্মুখী ও আত্মজাগরণমূলক কবিতা। এখানে কবি মানবমনের উদাসীনতা, সুযোগ হারানো এবং আধ্যাত্মিক জাগরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: গীতালি (১৯১৪)
কবিতার নাম: ও আমার মন যখন জাগলি না রে
প্রকাশকাল: ১৯১৪
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: আত্মজাগরণ, ভক্তিমূলক
ও আমার মন যখন জাগলি না রে – কবিতার পাঠ
ও আমার মন যখন জাগলি না রে
তোর মনের মানুষ এল দ্বারে।
তার চলে যাবার শব্দ শুনে
ভাঙল রে ঘুম—
ও তোর ভাঙল রে ঘুম অন্ধকারে।
মাটির ‘পরে আঁচল পাতি’
একলা কাটে নিশীথ রাতি,
তার বাঁশি বাজে আঁধার-মাঝে
দেখি না যে চক্ষে তারে।
ওরে তুই যাহারে দিলি ফাঁকি
খুঁজে তারে পায় কি আঁখি?
এখন পথে ফিরে পাবি কি রে
ঘরের বাহির করলি যারে।
ভাবার্থ
এই কবিতায় কবি গভীরভাবে উপলব্ধি করিয়েছেন, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে মন জাগ্রত না থাকলে জীবনের সুযোগ ও আধ্যাত্মিক ডাক হারিয়ে যায়। “মনের মানুষ” এখানে ঈশ্বর বা জীবনের সত্যের প্রতীক, যিনি দ্বারে এসে উপস্থিত হয়েছিলেন, কিন্তু উদাসীনতার কারণে তাকে গ্রহণ করা হয়নি। পরে সেই হারানোর বেদনা ও অনুশোচনা মনের গভীরে বাজতে থাকে।
শব্দার্থ
মনের মানুষ: প্রিয়তম, ঈশ্বর বা চিরন্তন সত্য।
নিশীথ রাতি: গভীর রাত, একাকিত্বের প্রতীক।
আঁচল পাতি: পথ বা স্থান প্রস্তুত করা, অপেক্ষা করা।
ফাঁকি দেওয়া: সুযোগ বা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া।