কোথায় আলো কবিতা । গীতাঞ্জলি । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । Kothay Alo

কোথায় আলো (Kothay Alo) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের (প্রথম প্রকাশ: ১৯১০) অন্তর্গত একটি গভীর আবেগমণ্ডিত কবিতা। সমগ্র গীতাঞ্জলি প্রেম, ভক্তি, বিষাদ ও আধ্যাত্মিকতার এক অসামান্য মেলবন্ধন। এই কবিতায় কবি বিরহের তীব্র যন্ত্রণা, অন্ধকারের মধ্যে আলোর খোঁজ, এবং প্রেমের দীপ জ্বালানোর আকাঙ্ক্ষাকে শক্তিশালী চিত্রকল্প ও প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। এটি কেবল প্রেমিক-প্রেমিকার নয়, ঈশ্বর-ভক্ত সম্পর্কের প্রতীকী উপস্থাপনাও বটে।

কবিতার মৌলিক তথ্য

  • কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • কাব্যগ্রন্থ: গীতাঞ্জলি

  • কবিতার নাম: কোথায় আলো

  • প্রকাশকাল: ১৯১০

  • বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: প্রেম, বিরহ, আধ্যাত্মিকতা, আলোর অনুসন্ধান

 

 

কোথায় আলো কবিতা – কবিতার পাঠ

 

কোথায়-আলো, কোথায় ওরে আলো।

বিরহানলে জ্বালো রে তারে জ্বালো।

              রয়েছে দীপ না আছে শিখা,

              এই কি ভালে ছিল রে লিখা–

ইহার চেয়ে মরণ সে যে ভালো।

বিরহানলে প্রদীপখানি জ্বালো।

বেদনাদূতী গাহিছে, “ওরে প্রাণ,

তোমার লাগি জাগেন ভগবান।

              নিশীথে ঘন অন্ধকারে

              ডাকেন তোরে প্রেমাভিসারে,

দুঃখ দিয়ে রাখেন তোর মান।

তোমার লাগি জাগেন ভগবান।’

গগনতল গিয়েছে মেঘে ভরি,

বাদল-জল পড়িছে ঝরি ঝরি।

              এ ঘোর রাতে কিসের লাগি

              পরান মম সহসা জাগি

এমন কেন করিছে মরি মরি।

বাদল-জল পড়িছে ঝরি ঝরি।

বিজুলি শুধু ক্ষণিক আভা হানে,

নিবিড়তর তিমির চোখে আনে।

              জানি না কোথা অনেক দূরে

              বাজিল প্রাণ গভীর সুরে,

সকল গান টানিছে পথপানে।

নিবিড়তর তিমির চোখে আনে।

কোথায় আলো, কোথায় ওরে আলো।

বিরহানলে জ্বালো রে তারে জ্বালো।

              ডাকিছে মেঘ, হাঁকিছে হাওয়া,

              সময় গেলে হবে না যাওয়া,

নিবিড় নিশা নিকষঘন কালো।

পরান দিয়ে প্রেমের দীপ জ্বালো।

মন্তব্য করুন