তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ [Tomar Srishtir Poth Rekheccho] কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষলেখা (১৯৪১) কাব্যগ্রন্থের একটি গভীর দার্শনিক রচনা। শেষলেখা রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনের কাব্যসৃষ্টি, যেখানে জীবনের সত্য, মৃত্যু, প্রবঞ্চনা, শান্তি এবং চিরন্তন মুক্তির সন্ধান এক বিশেষ অন্তর্দৃষ্টিতে ধরা দিয়েছে। এই কবিতায় কবি জীবনের পথে ছলনা ও প্রবঞ্চনার অস্তিত্ব স্বীকার করলেও, সত্য ও অন্তরের পবিত্রতার জয়গান গেয়েছেন।
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: শেষলেখা
কবিতার নাম: তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ
প্রকাশকাল: ১৯৪১
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: দার্শনিক ও নীতিশিক্ষামূলক কবিতা
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ – কবিতার পাঠ
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে,
হে ছলনাময়ী।
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে।
এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত;
তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি।
তোমার জ্যোতিষ্ক তা’রে
যে-পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তা’রে চিরসমুজ্জল।
বাহিরে কুটিল হোক অন্তরে সে ঋজু,
এই নিয়ে তাহার গৌরব।
লোকে তা’রে বলে বিড়ম্বিত।
সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে ধৌত অন্তরে অন্তরে।
কিছুতে পারে না তা’রে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে
আপন ভান্ডারে।
অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।