Site icon Amar Rabindranath [ আমার রবীন্দ্রনাথ ] GOLN

নুটু কবিতা | nutu kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নুটু কবিতাটি [ nutu kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বীথিকা কাব্যগ্রন্থের অংশ।

নুটু nutu

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

কাব্যগ্রন্থের নামঃ বীথিকা

কবিতার নামঃ নুটু nutu

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ Rabindranath Tagore ]

নুটু কবিতা | nutu kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রমাদেবীর মৃত্যু উপলক্ষে

ফাল্গুনের পূর্ণিমার আমন্ত্রণ পল্লবে পল্লবে

এখনই মুখর হল অধীর মর্মরকলরবে।

          বৎসে, তুমি বৎসরে বৎসরে

          সাড়া তারি দিতে মধুস্বরে,

আমাদের দূত হয়ে তোমার কণ্ঠের কলগান

উৎসবের পুষ্পাসনে বসন্তেরে করেছে আহ্বান।

নিষ্ঠুর শীতের দিনে গেলে তুমি রুগ্‌ণ তনু বয়ে

আমাদের সকলের উৎকণ্ঠিত আশীর্বাদ লয়ে।

          আশা করেছিনু মনে মনে

          নববসন্তের আগমনে

ফিরিয়া আসিবে যবে লবে আপনার চিরস্থান,

কাননলক্ষ্মীরে তুমি করিবে আনন্দ-অর্ঘ্যদান।

          এবার দক্ষিণবায়ু দুঃখের নিশ্বাস এল বহে;

তুমি তো এলে না ফিরে; এ আশ্রম তোমার বিরহে

          বীথিকার ছায়ার আলোকে

          সুগভীর পরিব্যাপ্ত শোকে

কহিছে নির্বাকবাণী বৈরাগকরণ ক্লান্ত সুরে,

তাহারি রণনধ্বনি প্রান্তরে বাজিছে দূরে দূরে।

শিশুকাল হতে হেথা সুখে-দুঃখে-ভরা দিন-রাত

করেছে তোমার প্রাণে বিচিত্র বর্ণের রেখাপাত।

          কাশের মঞ্জরী-শুভ্র দিশা,

          নিস্তব্ধ মালতী-ঝরা নিশা,

প্রশান্ত শিউলি-ফোটা প্রভাত শিশিরে-ছলোছলো,

দিগন্ত-চমক-দেওয়া সূর্যাস্তের রশ্মি জ্বলোজ্বলো।

 

রবীন্দ্রনাথ-ঠাকুর [ Rabindranath Tagore ]

এখনো তেমনি হেথা আসিবে দিনের পর দিন,

তবুও সে আজ হতে চিরকাল রবে তুমি-হীন।

          বসে আমাদের মাঝখানে

          কভু যে তোমার গানে গানে

ভরিবে না সুখসন্ধ্যা, মনে হয়, অসম্ভব অতি–

বর্ষে বর্ষে দিনে দিনে প্রমাণ করিবে সেই ক্ষতি।

বারে বারে নিতে তুমি গীতিস্রোতে কবি-আশীর্বাণী,

তাহারে আপন পাত্রে প্রণামে ফিরায়ে দিতে আনি।

          জীবনের দেওয়া-নেওয়া সেই

          ঘুচিল অন্তিম নিমেষেই–

স্নেহোজ্জ্বল কল্যাণের সে সম্বন্ধ তোমার আমার

গানের নির্মাল্য-সাথে নিয়ে গেলে মরণের পার।

হায় হায়, এত প্রিয়, এতই দুর্লভ যে সঞ্চয়

একদিনে অকস্মাৎ তারও যে ঘটিতে পারে লয়!

          হে অসীম, তব বক্ষোমাঝে

          তার ব্যথা কিছুই না বাজে,

          সৃষ্টির নেপথ্যে সেও আছে তব দৃষ্টির ছায়ায়–

স্তব্ধবীণা রঙ্গগৃহে মোরা বৃথা করি “হায় হায়’।

হে বৎসে, যা দিয়েছিলে আমাদের আনন্দভাণ্ডারে

তারি স্মৃতিরূপে তুমি বিরাজ করিবে চারিধারে।

          আমাদের আশ্রম-উৎসব

          যখনই জাগাবে গীতরব

তখনই তাহার মাঝে অশ্রুত তোমার কণ্ঠস্বর

অশ্রুর আভাস দিয়ে অভিষিক্ত করিবে অন্তর।

আরও দেখুনঃ 

Exit mobile version