পদ্মা কবিতাটি [ podma kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর চৈতালী-কাব্যগ্রন্থের অংশ। এটি আশ্বিন, ১৩০৩ (১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দ) বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়। এতে সর্বমোট ৭৮টি কবিতা রয়েছে। এটি রবীন্দ্রনাথের কাব্য রচনার “চিত্রা-চৈতালি পর্ব”-এর অন্তর্গত একটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি।
কাব্যগ্রন্থের নামঃ চৈতালী
কবিতার নামঃ পদ্মা
পদ্মা কবিতা । podma kobita | চৈতালী কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
হে পদ্মা আমার,
তোমায় আমায় দেখা শত শত বার।
একদিন জনহীন তোমার পুলিনে,
গোধূলির শুভলগ্নে হেমন্তের দিনে,
সাক্ষী করি পশ্চিমের সূর্য অস্তমান
তোমারে সঁপিয়াছিনু আমার পরান।
অবসানসন্ধ্যালোকে আছিলে সেদিন
নতমুখী বধূসম শান্ত বাক্যহীন;
সন্ধ্যাতারা একাকিনী সস্নেহ কৌতুকে
চেয়ে ছিল তোমাপানে হাসিভরা মুখে।
সেদিনের পর হতে, হে পদ্মা আমার,
তোমায় আমায় দেখা শত শত বার।
নানা কর্মে মোর কাছে আসে নানা জন,
নাহি জানে আমাদের পরানবন্ধন,
নাহি জানে কেন আসি সন্ধ্যা-অভিসারে
বালুকা শয়ন-পাতা নির্জন এ পারে।
যখন মুখর তব চক্রবাকদল
সুপ্ত থাকে জলাশয়ে ছাড়ি কোলাহল,
যখন নিস্তব্ধ গ্রামে তব পূর্বতীরে
রুদ্ধ হয়ে যায় দ্বার কুটিরে কুটিরে,
তুমি কোন্ গান কর আমি কোন্ গান
দুই তীরে কেহ তার পায় নি সন্ধান।
নিভৃতে শরতে গ্রীষ্মে শীতে বরষায়
শত বার দেখাশুনা তোমায় আমায়।
কতদিন ভাবিয়াছি বসি তব তীরে
পরজন্মে এ ধরায় যদি আসি ফিরে,
যদি কোনো দূরতর জন্মভূমি হতে
তরী বেয়ে ভেসে আসি তব খরস্রোতে–
কত গ্রাম কত মাঠ কত ঝাউঝাড়
কত বালুচর কত ভেঙে-পড়া পাড়
পার হয়ে এই ঠাঁই আসিব যখন
জেগে উঠিবে না কোনো গভীর চেতন?
জন্মান্তরে শতবার যে নির্জন তীরে
গোপন হৃদয় মোর আসিত বাহিরে,
আর বার সেই তীরে সে সন্ধ্যাবেলায়
হবে না কি দেখাশুনা তোমায় আমায়?
আরও দেখুনঃ
পোড়োবাড়ি কবিতা | Porobari Kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শ্যামলা কবিতা | shyamla kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
বিহ্বলতা কবিতা | bihwolota kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
নিমন্ত্রণ কবিতা | nimontron kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
ছায়াছবি কবিতা | chhayachhobi kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর