শিশু কাব্যগ্রন্থের নবীন অতিথি কবিতা । শিশু । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । Nabin Otithi

“নবীন অতিথি” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিশু (১৯০৩) কাব্যগ্রন্থের একটি সংবেদনশীল কবিতা, যেখানে অজানা এক আগমনের প্রতি বিস্ময়, আনন্দ ও শ্রদ্ধা মিশে আছে। এখানে কবি এক নবীন অতিথির আগমনকে স্বাগত জানিয়ে ভাবছেন—এই অতিথি কি একেবারে নতুন, না কি চিরকালীন কোনো সত্তা, যিনি যুগে যুগে নতুন রূপে আবির্ভূত হন। কবিতাটি একাধারে রহস্যময়, আধ্যাত্মিক এবং গভীর আবেগপূর্ণ।

কবিতার মৌলিক তথ্য

  • কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • কাব্যগ্রন্থ: শিশু (১৯০৩)

  • কবিতার নাম: নবীন অতিথি

  • বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: আধ্যাত্মিকতা, রহস্য, নতুন আগমন, অনুভূতি

নবীন অতিথি – কবিতার পাঠ

গান

হে    নবীন-অতিথি,

তুমি  নূতন কি তুমি চিরন্তন।

যুগে যুগে কোথা তুমি ছিলে সংগোপন।

যতনে কত কী আনি   বেঁধেছিনু গৃহখানি,

হেথা কে তোমারে বলো করেছিল নিমন্ত্রণ।

কত আশা ভালোবাসা গভীর হৃদয়তলে

ঢেকে রেখেছিনু বুকে, কত হাসি অশ্রুজলে!

একটি না কহি বাণী         তুমি এলে মহারানী,

কেমনে গোপনে মনে করিলে হে পদার্পণ।

 

ভাবার্থ

কবিতায় এক রহস্যময় অতিথির আগমনে বক্তা বিস্মিত ও অভিভূত। অতিথি হয়তো সম্পূর্ণ নতুন, হয়তো চিরন্তন কোনো সত্তা, যিনি বহু যুগ ধরে অদৃশ্য থেকে এসেছেন। অতিথির আগমনের জন্য বক্তা অজান্তেই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন—গৃহ সজ্জা, মনের ভাণ্ডারে সঞ্চিত আশা-ভালোবাসা—কিন্তু কোনো পূর্ববার্তা ছাড়াই তিনি উপস্থিত হয়েছেন। এই আগমন একাধারে অপ্রত্যাশিত, আনন্দদায়ক এবং গোপনীয়।

শব্দার্থ

  • নবীন-অতিথি: নতুন অতিথি, এখানে প্রতীকী অর্থে রহস্যময় আগমনকারী

  • চিরন্তন: যার শুরু ও শেষ নেই; অনন্তকাল ধরে বিদ্যমান

  • সংগোপন: লুকিয়ে, গোপনে

  • পদার্পণ: পা রাখা, আগমন

মন্তব্য করুন