হিসাব আমার মিলবে না তা জানি (Hisab Amar Milbe Na Ta Jani) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতালি (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থের একটি ভক্তিমূলক কবিতা। এখানে কবি ঈশ্বরের প্রতি বিনম্র আত্মসমর্পণ এবং নিজের অক্ষমতার স্বীকারোক্তি প্রকাশ করেছেন। তিনি জানেন তাঁর হিসাব মেলানো সম্ভব নয়, তবুও যা আছে তাই সমর্পণ করেছেন প্রভুর কাছে, অহংকার ত্যাগ করে শুধুমাত্র ভক্তির জায়গা থেকে।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: গীতালি (১৯১৪)
কবিতার নাম: হিসাব আমার মিলবে না তা জানি
প্রকাশকাল: ১৯১৪
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: ভক্তিমূলক ও আত্মসমর্পণমূলক কবিতা
হিসাব আমার মিলবে না তা জানি – কবিতার পাঠ
হিসাব আমার মিলবে না তা জানি,
যা আছে তাই সামনে দিলাম আনি।
করজোড়ে রইনু চেয়ে মুখে
বোঝাপড়া কখন যাবে চুকে,
তোমার ইচ্ছা মাথায় লব মানি।
গর্ব আমার নাই রহিল প্রভু,
চোখের জল তো কাড়বে না তো কভু।
নাই বসালে তোমার কোলের কাছে,
পায়ের তলে সবারি ঠাঁই আছে–
ধুলার ‘পরে পাতব আসনখানি।
ভাবার্থ
কবিতায় কবি ঈশ্বরের কাছে বিনম্রভাবে নিজের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানেন যে তাঁর জীবনের সব হিসাব-নিকাশ মেলানো সম্ভব নয়, তবুও যা আছে তাই আন্তরিকভাবে সমর্পণ করেছেন। অহংকার ত্যাগ করে তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রতি সম্পূর্ণভাবে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। কবিতাটি আত্মসমর্পণ, বিনয় এবং ভক্তির গভীর প্রকাশ।
শব্দার্থ
হিসাব মিলবে না: জীবনের কাজ বা কর্তব্যের পূর্ণতা অর্জন না হওয়া।
করজোড়ে: দুই হাত জোড় করে বিনয়ের সাথে।
বোঝাপড়া চুকে যাওয়া: সব হিসাব বা বিরোধ মিটে যাওয়া।
গর্ব নাই: অহংকারের সম্পূর্ণ অভাব।
আসনখানি: বসার স্থান; এখানে ভক্তির প্রতীক।