আমি নিশি নিশি , প্রেম ৩০৩ | Ami nishi nishi

আমি নিশি নিশি , প্রেম ৩০৩ | Ami nishi nishi  রবীন্দ্রনাথ নিজেও সুগায়ক ছিলেন। বিভিন্ন সভাসমিতিতে তিনি স্বরচিত গান পরিবেশন করতেন। কয়েকটি গান তিনি গ্রামোফোন ডিস্কেও প্রকাশ করেছিলেন। সঙ্গীত প্রসঙ্গে কয়েকটি প্রবন্ধও তিনি রচনা করেন। এছাড়া স্বরচিত নাটকেও তিনি নিজের গান ব্যবহার করতেন।

আমি নিশি নিশি , প্রেম ৩০৩ | Ami nishi nishi

রাগ: ভৈরবী

তাল: একতাল

রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ১২৯৩

 

আমি নিশি নিশি:

আমি নিশি নিশি কত রচিব শয়ন আকুলনয়ন রে।

কত নিতি নিতি বনে করিব যতনে কুসুমচয়ন রে।

কত শারদ যামিনী হইবে বিফল, বসন্ত যাবে চলিয়া।

কত উদিবে তপন, আশার স্বপন প্রভাতে যাইবে ছলিয়া।

এই যৌবন কত রাখিব বাঁধিয়া, মরিব কাঁদিয়া রে।

সেই চরণ পাইলে মরণ মাগিব সাধিয়া সাধিয়া রে।

আমি কার পথ চাহি এ জনম বাহি; কার দরশন যাচি রে।

যেন আসিবে বলিয়া কে গেছে চলিয়া, তাই আমি বসে আছি রে।

তাই মালাটি গাঁথিয়া পরেছি মাথায়, নীলবাসে তনু ঢাকিয়া।

তাই বিজন আলয়ে প্রদীপ জ্বালায়ে একেলা রয়েছি জাগিয়া।

ওগো তাই কত নিশি চাঁদ ওঠে হাসি, তাই কেঁদে যায় প্রভাতে।

ওগো তাই ফুলবনে মধুসমীরণে ফুটে ফুল কত শোভাতে।

ওই বাঁশিস্বর তার আসে বারবার, সেই শুনে কেন আসে না।

এই হৃদয়-আসন শূন্য পড়ে থাকে, কেঁদে মরে শুধু বাসনা।

মিছে পরশিয়া কায় বায়ু বহে যায়, বহে যমুনার লহরী।

কেন কুহু কুহু পিক কুহরিয়া ওঠে, যামিনী যে ওঠে শিহরি।

ওগো, যদি নিশিশেষে আসে হেসে হেসে মোর হাসি আর রবে কি

এই জাগরণে-ক্ষীণ বদনমলিন আমারে হেরিয়া কবে কী।

আমি সারা রজনীর গাঁথা ফুলমালা প্রভাতে চরণে ঝরিব–

ওগো, আছে সুশীতল যমুনার জল, দেখে তারে আমি মরিব॥

 

 

রবীন্দ্রনাথের সকল গান গীতবিতান নামক সংকলন গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। উক্ত গ্রন্থের ১ম ও ২য় খণ্ডে রবীন্দ্রনাথ নিজেই তার গানগুলিকে ‘পূজা’, ‘স্বদেশ’, ‘প্রেম’, ‘প্রকৃতি’, ‘বিচিত্র’ও ‘আনুষ্ঠানিক’ – এই ছয়টি পর্যায়ে বিন্যস্ত করেছিলেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্তৃক রচিত মোট গানের সংখ্যা ২২৩২।তার গানের কথায় উপনিষদ্‌, সংস্কৃত সাহিত্য, বৈষ্ণব সাহিত্য ও বাউল দর্শনের প্রভাব সুস্পষ্ট। অন্যদিকে তার গানের সুরে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের (হিন্দুস্তানি ও কর্ণাটকি উভয় প্রকার) ধ্রুপদ, খেয়াল, ঠুমরি, টপ্পা, তরানা, ভজন ইত্যাদি ধারার সুর এবং সেই সঙ্গে বাংলার লোকসঙ্গীত, কীর্তন, রামপ্রসাদী, পাশ্চাত্য ধ্রুপদি সঙ্গীত ও পাশ্চাত্য লোকগীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।

মন্তব্য করুন