আরো একবার যদি পারি (Aro Ekbar Jodi Pari) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ জীবনের গভীর আবেগময় কবিতাগুলির মধ্যে একটি, যা শেষলেখা (১৯৪১) কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত। এখানে কবি স্মৃতিচারণা, হারানো ভালোবাসা ও বিদেশের স্নেহময় সম্পর্কের প্রতি নস্টালজিয়া ফুটিয়ে তুলেছেন।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: শেষলেখা (১৯৪১)
কবিতার নাম: আরো একবার যদি পারি
প্রকাশকাল: ১৯৪১
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: স্মৃতিচারণা, নস্টালজিয়া, ভালোবাসা
আরো একবার যদি পারি – কবিতার পাঠ
আরো একবার যদি পারি
খুঁজে দেব সে আসনখানি
যার কোলে রয়েছে বিছানো
বিদেশের আদরের বাণী।
অতীতের পালানো স্বপন
আবার করিবে সেথা ভিড়,
অস্ফুট গুঞ্জনস্বরে
আরবার রচি দিবে নীড়।
সুখস্মৃতি ডেকে ডেকে এনে
জাগরণ করিবে মধুর,
যে বাঁশি নীরব হয়ে গেছে
ফিরায়ে আনিবে তার সুর।
বাতায়নে রবে বাহু মেলি
বসন্তের সৌরভের পথে,
মহানিঃশব্দের পদধ্বনি
শোনা যাবে নিশীথজগতে।
বিদেশের ভালোবাসা দিয়ে
যে প্রেয়সী পেতেছে আসন
চিরদিন রাখিবে বাঁধিয়া
কানে কানে তাহারি ভাষণ।
ভাষা যার জানা ছিল নাকো,
আঁখি যার কয়েছিল কথা,
জাগায়ে রাখিবে চিরদিন
সকরুণ তাহারি বারতা।
ভাবার্থ
এই কবিতায় কবি এমন এক মুহূর্তের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন যেখানে তিনি আবারও ফিরে যেতে চান সেই প্রিয় স্থান ও প্রিয়জনের কাছে, যিনি বিদেশের মাটিতে স্নেহের আসন প্রস্তুত করেছিলেন। সেই সম্পর্কের ভাষা ছিল না কথায়, বরং চোখের ভাষা ও নীরব অনুভূতিতে পূর্ণ। কবি চান সেই সুখস্মৃতি ও হারানো সুর আবারও জীবনে ফিরে আসুক এবং চিরকাল তাকে জাগিয়ে রাখুক।
শব্দার্থ
বিদেশের আদরের বাণী: বিদেশে প্রাপ্ত ভালোবাসা ও স্নেহপূর্ণ বার্তা।
অস্ফুট গুঞ্জনস্বরে: অস্পষ্ট কিন্তু মধুর শব্দে।
মহানিঃশব্দ: গভীর নীরবতা, যা আধ্যাত্মিক বা মহিমান্বিত।
বারতা: বার্তা, সংবাদ বা স্মরণীয় কথা।