জাগরণ কবিতা খেয়া [ Jagoron Kobita ]
কাব্যগ্রন্থ : খেয়া [ ১৯০৬ ]
কবিতার শিরনামঃ জাগরণ
![জাগরণ কবিতা খেয়া [ Jagoron Kobita ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 2 জাগরণ jagoron [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/download-3-1.jpg)
জাগরণ কবিতা খেয়া [ Jagoron Kobita ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কৃষ্ণপক্ষে আধখানা চাঁদ
উঠল অনেক রাতে,
খানিক কালো খানিক আলো
পড়ল আঙিনাতে।
ওরে আমার নয়ন, আমার
নয়ন নিদ্রাহারা,
আকাশ-পানে চেয়ে চেয়ে
কত গুনবি তারা।
সাড়া কারো নাই রে, সবাই
ঘুমায় অকাতরে।
প্রদীপগুলি নিবে গেল
দুয়ার-দেওয়া ঘরে।
তুই কেন আজ বেড়াস ফিরি
আলোয় অন্ধকারে।
তুই কেন আজ দেখিস চেয়ে
বনপথের পারে।
শব্দ কোথাও শুনতে কি পাস
মাঠে তেপান্তরে।
মাটি কোথাও উঠছে কেঁপে
ঘোড়ার পদভরে?
কোথাও ধুলো উড়ছে কি রে
কোনো আকাশ-কোণে।
আগুনশিখা যায় কি দেখা
দূরের আম্রবনে।
![জাগরণ কবিতা খেয়া [ Jagoron Kobita ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 3 চিরকাল একি লীলা গো chirokal eki lila go [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/images-9-2.jpg)
সন্ধ্যাবেলা তুই কি কারো
লিখন পেয়েছিলি।
বুকের কাছে লুকিয়ে রেখে
শান্তি হারাইলি?
নাচে রে তাই রক্ত নাচে
সকল দেহ-মাঝে,
বাজে রে তাই কী কথা তোর
পাঁজর জুড়ে বাজে।
আজিকে এই খণ্ড চাঁদের
ক্ষীণ আলোকের ‘পরে
ব্যাকুল হয়ে অশান্ত প্রাণ
আঘাত করে মরে।
কী লুকিয়ে আছে ওরে,
কী রেখেছে ঢেকে–
কিসের কাঁপন কিসের আভাস
পাই যে থেকে থেকে।
ওরে, কোথাও নাই রে হাওয়া,
স্তব্ধ বাঁশের শাখা–
বালুতটের পাশে নদী
কালির বর্ণে আঁকা।
বনের ‘পরে চেপে আছে
কাহার অভিশাপ–
ধরণীতল মূর্ছা গেছে
লয়ে আপন তাপ।
![জাগরণ কবিতা খেয়া [ Jagoron Kobita ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 4 আলোকে আসিয়া এরা লীলা করে যায় aloke asiya era lila kore jay [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/images-40-3.jpg)
ওরে, হেথায় আনন্দ নেই–
পুরানো তোর বাড়ি,
ভাঙা দুয়ার বাদুড়কে ওই
দিয়েছে পথ ছাড়ি।
সন্ধ্যা হতে ঘুমিয়ে পড়ে
যে যেথা পায় স্থান–
জাগে না কেউ বীণা হাতে,
গাহে না কেউ গান।
হেথা কি তোর দুয়ারে কেউ
পৌঁছোবে আজ রাতে–
এক হাতে তার ধ্বজা তুলে,
আলো আর-এক হাতে?
হঠাৎ কিসের চঞ্চলতা
ছুটে আসবে বেগে,
গ্রামের পথে পাখিরা সব
গেয়ে উঠবে জেগে।
উঠবে মৃদঙ বেজে বেজে
গর্জি গুরুগুরু,
অঙ্গে হঠাৎ দেবে কাঁটা,
বক্ষ দুরুদুরু।
ওরে নিদ্রাবিহীন আঁখি,
ওরে শান্তিহারা,
আঁধার পথে চেয়ে চেয়ে
কার পেয়েছিস সাড়া।
আরও দেখুনঃ
- ননীলাল বাবু যাবে লঙ্কা nanilal babu jabe lonka [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ভোলানাথ লিখেছিল bholanath likhechhilo [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- একটা খোঁড়া ঘোড়ার পরে ekta khora ghorar pore [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- স্ত্রীর বোন চায়ে তার strir bon chaye tar [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- ভুত হয়ে দেখা দিল bhut hoye dekha dilo [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর