অত্যুক্তি
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ : সানাই [ ১৯৪০ ]
কবিতার শিরনামঃ অত্যু’ক্তি
![অত্যুক্তি otyukti [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 2 অত্যুক্তি otyukti [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/images-5-1-300x150.jpg)
অত্যুক্তি otyukti [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মন যে দরিদ্র, তার
তর্কের নৈপুণ্য আছে, ধনৈশ্বর্য নাইকো ভাষার।
কল্পনাভান্ডার হতে তাই করে ধার
বাক্য-অলংকার।
কখন হৃদয় হয় সহসা উতলা–
তখন সাজিয়ে বলা
আসে অগত্যাই;
শুনে তাই
কেন তুমি হেসে ওঠ, আধুনিকা প্রিয়ে,
অত্যু’ক্তির অপবাদ দিয়ে।
তোমার সম্মানে ভাষা আপনারে করে সুসজ্জিত,
তারে তুমি বারে বারে পরিহাসে কোরো না লজ্জিত।
তোমার আরতি-অর্ঘ্যে অত্যু’ক্তিবঞ্চিত ভাষা হেয়,
অসত্যের মতো অশ্রদ্ধেয়।
নাই তার আলো,
তার চেয়ে মৌন ঢের ভালো।
তব অঙ্গে অত্যু’ক্তি কি কর না বহন
সন্ধ্যায় যখন
দেখা দিতে আস।
![অত্যুক্তি otyukti [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 3 সে তো সে দিনের কথা, বাক্যহীন যবে se to se diner kotha bakko hin jobe [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/images-6-1.jpg)
তখন যে হাসি হাস
সে তো নহে মিতব্যয়ী প্রত্যহের মতো–
অতিরিক্ত মধু কিছু তার মধ্যে থাকে তো সংহত।
সে হাসির অতিভাষা
মোর বাক্যে ধরা দেবে নাই সে প্রত্যাশা।
অলংকার যত পায় বাক্যগুলো তত হার মানে,
তাই তার অস্থিরতা বাড়াবাড়ি ঠেকে তব কানে।
কিন্তু, ওই আশমানি শাড়িখানি
ও কি নহে অত্যু’ক্তির বাণী।
তোমার দেহের সঙ্গে নীল গগনের
ব্যঞ্জনা মিলায়ে দেয়, সে যে কোন্ অসীম মনের
আপন ইঙ্গিত,
সে যে অঙ্গের সংগীত।
আমি তারে মনে জানি সত্যেরো অধিক।
সোহাগবাণীরে মোর হেসে কেন বল কাল্পনিক।
আরও দেখুনঃ
- উৎসর্গ ১৯০৪ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- গীতাঞ্জলি | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- এই তো তোমার প্রেম ওগো হৃদয়হরণ | ei to tomar prem ogo hridoyhoron | [ কবিতা ] –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- গর্ব করে নিই নে ও নাম, জান অন্তর্যামী | gorbo kore nei ne o nam, jan ontorjami | [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- আমার মিলন লাগি তুমি আসছ কবে থেকে | amar milon lagi tumi ashcho kobe theke [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর