অন্তরতম কবিতাটি [ ontorotomo-kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বীথিকা-কাব্যগ্রন্থের অংশ।
অন্তরতম ontorotomo
কাব্যগ্রন্থের নামঃ বীথিকা
কবিতার নামঃ অন্তরতম ontorotomo

অন্তরতম কবিতা | ontorotomo kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
আপন মনে যে কামনার চলেছি পিছু পিছু
নহে সে বেশি কিছু।
মরুভূমিতে করেছি আনাগোনা–
তৃষিত হিয়া চেয়েছে যাহা নহে সে হীরা সোনা,
পর্ণপুটে একটু শুধু জল,
উৎসতটে খেজুরবনে ক্ষণিক ছায়াতল।
সেইটুকুতে বিরোধ ঘোচে জীবন মরণের,
বিরাম জোটে শ্রান্ত চরণের।
হাটের হাওয়া ধুলায় ভরপুর,
তাহার কোলাহলের তলে একটুখানি সুর
সকল হতে দুর্লভ তা, তবু সে নহে বেশি;
বৈশাখের তাপের শেষাশেষি
আকাশ-চাওয়া শুষ্কমাটি-‘পরে
হঠাৎ-ভেসে-আসা মেঘের ক্ষণকালের তরে
এক পশলা বৃষ্টিবরিষন,
দুঃস্বপন বক্ষে যবে শ্বাস নিরোধ করে
জাগিয়ে-দেওয়া করুণ পরশন;
এইটুকুরই অভাব গুরুভার,
না জেনে তবু ইহারই লাগি হৃদয়ে হাহাকার।
অনেক দুরাশারে
সাধনা করে পেয়েছি তবু ফেলিয়া গেছি তারে।
যে পাওয়া শুধু রক্তে নাচে, স্বপ্নে যাহা গাঁথা,
ছন্দে যার হল আসন পাতা,
খ্যাতিস্মৃতির পাষাণপটে রাখে না যাহা রেখা,
ফাল্গুনের সাঁঝতারায় কাহিনী যার লেখা,
সে ভাষা মোর বাঁশিই শুধু জানে–
এই যা দান গিয়েছে মিশে গভীরতর প্রাণে,
করি নি যার আশা,
যাহার লাগি বাঁধি নি কোনো বাসা,
বাহিরে যার নাইকো ভার, যায় না দেখা যারে,
বেদনা তারই ব্যাপিয়া মোর নিখিল আপনারে।
আরও দেখুনঃ