প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ গানের বই ]

প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ গানের বই ] – (Prakriti by Rabindranath Tagore) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর লেখা একটি বিখ্যাত বাংলা গানের বই ।

 

প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ গানের বই ]
প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ গানের বই ]

প্রকৃতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ গানের বই ]

অনন্তের বাণী তুমি
অনেক দিনের মনের
অমল ধবল পালে
অশ্রুভরা বেদনা দিকে

আঁধার অম্বরে প্রচণ্ড
আঁধার কুঁড়ির বাঁধন
আকাশ আমায় ভরল
আকাশ হতে খসল
আকাশতলে দলে দলে
আকাশভরা সূর্য-তারা
আজ আকাশের মনের
আজ কি তাহার
আজ কিছুতেই যায়
আজ খেলা ভাঙার খেলা
আজ তালের বনের
আজ দখিন-বাতাসে
আজ ধানের ক্ষেতে
আজ নবীন মেঘের
আজ প্রথম ফুলের
আজ বরষার রূপ
আজ বারি ঝরে

আজ শ্রাবণের আমন্ত্রণে
আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে
আজি এই গন্ধবিধুর
আজি ওই আকাশ-‘পরে
আজি কমলমুকুলদল খুলিল
আজি ঝড়ের রাতে
আজি ঝরো ঝরো
আজি তোমায় আবার
আজি দখিন-দুয়ার
আজি পল্লিবালিকা অলকগুচ্ছ
আজি বরিষনমুখরিত
আজি বর্ষারাতের শেষে
আজি বসন্ত জাগ্রত
আজি মেঘ কেটে
আজি শরততপনে প্রভাতস্বপনে
আজি শ্রাবণঘনগহন মোহে
আজি হৃদয় আমার
আন্ গো তোরা
আবার এসেছে আষাঢ়
আবার শ্রাবণ হয়ে
আমরা নূতন প্রাণের
আমরা বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ
আমার দিন ফুরালো
আমার নয়ন-ভুলানো এলে
আমার প্রিয়ার ছায়া
আমার বনে বনে
আমার মল্লিকাবনে যখন
আমার মালার ফুলের
আমার যে দিন
আমার রাত পোহালো
আমারে যদি জাগালে
আমি কী গান
আমি তখন ছিলেম
আমি পথভোলা এক
আমি শ্রাবণ-আকাশে ওই
আর নাই যে দেরি,
আলোর অমল কমলখানি
আষাঢ়, কোথা হতে
আষাঢ়সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল
আহ্বান আসিল মহোৎসবে

উতল-ধারা বাদল ঝরে

এই কথাটাই ছিলেম
এই মৌমাছিদের ঘরছাড়া
এই শ্রাবণ-বেলা বাদল-ঝরা
এই শ্রাবণের বুকের
এই সকাল বেলার
এক ফাগুনের গান
একটুকু ছোঁওয়া লাগে
একলা বসে বাদল-শেষে
একি আকুলতা ভুবনে
একি গভীর বাণী
একি মায়া, লুকাও
এতদিন যে বসেছিলেম
এনেছ ওই শিরীষ

এবার অবগুণ্ঠন খোলো
এবার এল সময়
এবার তো যৌবনের
এবার বিদায়বেলার সুর
এবার ভাসিয়ে দিতে
এবেলা ডাক পড়েছে
এল যে শীতের
এস’ এস’ বসন্ত,
এসে শরতের অমল
এসেছিনু দ্বারে তব
এসেছিলে তবু আস
এসো এসো হে
এসো গো, জ্বেলে
এসো নীপবনে ছায়াবীথিতলে
এসো শ্যামল সুন্দর
এসো হে এসো
এসো, এসো, এসো

ও আমার চাঁদের
ও আষাঢ়ের পূর্ণিমা
ও চাঁদ, তোমায়
ও মঞ্জরী, ও মঞ্জরী
ওই আসে ওই
ওই কি এলে
ওই বুঝি কালবৈশাখী
ওই ভাঙল হাসির বাঁধ
ওই মালতীলতা দোলে
ওই-যে ঝড়ের মেঘের
ওগো আমার শ্রাবণমেঘের
ওগো তুমি পঞ্চদশী
ওগো দখিন হাওয়া
ওগো বধূ সুন্দরী
ওগো শেফালিবনের মনের
ওগো সাঁওতালি ছেলে
ওরা অকারণে চঞ্চল
ওরে আয় রে
ওরে গৃহবাসী খোল্
ওরে ঝড় নেমে আয়
ওরে বকুল, পারুল,
ওরে ভাই, ফাগুন
ওলো শেফালি, ওলো

কখন বাদল-ছোঁওয়া লেগে
কত যে তুমি
কদম্বেরই কানন ঘেরি
কাঁপিছে দেহলতা থরথর
কার যেন এই
কিছু বলব ব’লে
কুসুমে কুসুমে চরণচিহ্ন
কে রঙ লাগালে
কেন পান্থ, এ চঞ্চলতা
কোথা যে উধাও
কোন্ খেপা শ্রাবণ
কোন্ পুরাতন প্রাণের
ক্লান্ত যখন আম্রকলির

গগনে গগনে আপনার মনে
গহন ঘন ছাইল
গহন রাতে শ্রাবণধারা

চক্ষে আমার তৃষ্ণা
চরণরেখা তব যে
চলে ছলোছলো নদীধারা
চলে যায় মরি
চিত্ত আমার হারালো
চেনা ফুলের গন্ধস্রোতে

ছাড়্ গো তোরা
ছায়া ঘনাইছে বনে

ঝরঝর বরিষে বারিধারা
ঝরা পাতা গো
ঝরে ঝরো ঝরো
ঝরো-ঝরো ঝরো-ঝরো

তপস্বিনী হে ধরণী
তপের তাপের বাঁধন
তিমির-অবগুণ্ঠনে বদন তব
তুমি কিছু দিয়ে
তুমি কোন্ পথে
তৃষ্ণার শান্তি, সুন্দরকান্তি
তোমরা যা বলো
তোমার আসন পাতব
তোমার নাম জানি
তোমার বাস কোথা-যে
তোমার মোহন রূপে

থামাও রিমিকি-ঝিমিকি বরিষন

দখিন-হাওয়া, জাগো জাগো
দারুণ অগ্নিবাণে রে
দিনশেষে বসন্ত যা
দেখো দেখো, দেখো
দোলে দোলে দোলে

ধরণী, দূরে চেয়ে
ধরণীর গগনের মিলনের
ধীরে ধীরে ধীরে

নব কুন্দধবলদলসুশীতলা
নব নব পল্লবরাজি
নব বসন্তের দানের
নমো নমো, নমো
নমো নমো, হে
নমো, নমো, নমো
নমো, নমো, নমো
নমো, নমো. নমো
না, যেয়ো না
নাই রস নাই
নিবিড় অন্তরতর বসন্ত
নিবিড় অমা-তিমির হতে
নিবিড় মেঘের ছায়ায়
নির্মল কান্ত, নমো
নিশীথরাতের প্রাণ
নীল- অঞ্জনঘন পুঞ্জছায়ায়
নীল আকাশের কোণে
নীল দিগন্তে ওই
নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে

পথিক মেঘের দল
পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে
পুব-সাগরের পার হতে
পুব-হাওয়াতে দেয় দোলা
পুরাতনকে বিদায় দিলে
পুষ্প ফুটে কোন্
পূর্ণচাঁদের মায়ায় আজি
পূর্বাচলের পানে তাকাই
পোহালো পোহালো বিভাবরী,
পৌষ তোদের ডাক
প্রখর তপনতাপে আকাশ

ফল ফলাবার আশা
ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায়
ফাগুন-হাওয়ায় রঙে রঙে
ফাগুনের নবীন আনন্দে
ফাগুনের পূর্ণিমা এল
ফাগুনের শুরু হতেই

বকুলগন্ধে বন্যা এল
বজ্রমানিক দিয়ে গাঁথা
বন্ধু, রহো রহো
বসন্ত তার গান
বসন্ত, তোর শেষ
বসন্তে আজ ধরার
বসন্তে কি শুধু
বসন্তে ফুল গাঁথল
বসন্তে-বসন্তে তোমার কবিরে
বহু যুগের ও পার
বাকি আমি রাখব
বাদল-দিনের প্রথম কদম
বাদল-ধারা হল সারা
বাদল-বাউল বাজায় রে
বাদল-মেঘে মাদল বাজে
বাসন্তী, হে ভুবনমোহিনী
বিদায় নিয়ে গিয়েছিলেম
বিদায় যখন চাইবে
বিশ্ববীণারবে বিশ্বজন মোহিছে
বৃষ্টিশেষের হাওয়া কিসের
বেদনা কী ভাষায়
বৈশাখ হে, মৌনী
বৈশাখের এই ভোরের
ব্যাকুল বকুলের ফুলে

ভেবেছিলেম আসবে ফিরে
ভোর থেকে আজ
ভোর হল যেই

মধু -গন্ধে ভরা
মধুর বসন্ত এসেছে
মধ্যদিনে যবে গান
মধ্যদিনের বিজন বাতায়নে
মন মোর মেঘের
মন যে বলে
মনে হল যেন
মম অন্তর উদাসে
মম মন-উপবনে চলে
মরি লো কার
মাধবী হঠাৎ কোথা
মেঘের কোলে কোলে
মেঘের কোলে রোদ
মেঘের ‘পরে মেঘ
মোর বীণা ওঠে
মোর ভাবনারে কী
মোরা ভাঙব তাপস

যদি তারে নাই
যায় দিন, শ্রাবণদিন
যেতে দাও যেতে

শরৎ, তোমার অরুণ
শরত-আলোর কমলবনে
শরতে আজ কোন্
শাঙনগগনে ঘোর ঘনঘটা
শিউলি ফুল, শিউলি
শিউলি-ফোটা ফুরোল যেই
শীতের বনে কোন্
শীতের হাওয়ার লাগল
শুক্‌নো পাতা কে
শুষ্কতাপের দৈত্যপুরে দ্বার
শেষ গানেরই রেশ
শ্যামল ছায়া, নাইবা গেলে
শ্যামল শোভন শ্রাবণ
শ্রাবণ, তুমি বাতাসে
শ্রাবণবরিষন পার হয়ে
শ্রাবণমেঘের আধেক দুয়ার
শ্রাবণের গগনের গায়

সঘন গহন রাত্রি
সব দিবি কে
সহসা ডালপালা তোর
সারা নিশি ছিলেম
সে কি ভাবে
সে দিন আমায়
সেই তো তোমার
সেই তো বসন্ত
স্বপ্নে আমার মনে

হায় হেমন্তলক্ষ্মী
হিমের রাতে ওই
হৃদয় আমার নাচে
হৃদয় আমার, ওই
হৃদয়ে ছিলে জেগে,
হৃদয়ে মন্দ্রিল ডমরু
হে তাপস, তব
হে মাধবী, দ্বিধা কেন
হে সন্ন্যাসী, হিমগিরি
হেমন্তে কোন্ বসন্তেরই
হেরিয়া শ্যামল ঘন

 

প্রকৃতি [ গানের বই ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আরও পড়ুন :

মন্তব্য করুন