বিস্মরণ
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ : পূরবী [ ১৯২৫ ]
কবিতার শিরনামঃ বিস্মরণ
![বিস্মরণ bismoron [ কবিতা ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 2 বিস্মরণ bismoron [ কবিতা ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/download-4-1.jpg)
Table of Contents
বিস্মরণ bismoron [ কবিতা ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
মনে আছে কার দেওয়া সেই ফুল?
সে ফুল যদি শুকিয়ে গিয়ে থাকে
তবে তারে সাজিয়ে রাখাই ভুল —
মিথ্যে কেন কাঁদিয়ে রাখ তাকে।
ধুলায় তারি শান্তি তারি গতি,
এই সমাদর কোরো তাহার প্রতি —
সময় যখন গেছে তখন তারে
ভুলো একেবারে।
মাঘের শেষে নাগকেশরের ফুলে
আকাশে বয় মন-হারানো হাওয়া;
বনের বক্ষ উঠেছে আজ দুলে,
চামেলি ওই কার যেন পথ-চাওয়া।
ছায়ায় ছায়ায় কাদের কানাকানি,
চোখে-চোখে নীরব জানাজানি —
এ উৎসবে শুকনো ফুলের লাজ
ঘুচিয়ে দিয়ো আজ।
![বিস্মরণ bismoron [ কবিতা ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 3 দীন দান deen daan | কাহিনী [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/04/download-2-1.jpg)
যদি-বা তার ফুরিয়ে থাকে বেলা,
মনে জেনো দুঃখ তাহে নাই;
করেছিল ক্ষণকালের খেলা,
পেয়েছিল ক্ষণকালের ঠাঁই।
অলকে সে কানের কাছে দুলি
বলেছিল নীরব কথাগুলি,
গন্ধ তাহার ফিরেছে পথ ভুলে
তোমার এলোচুলে।
সেই মাধুরী আজ কি হবে ফাঁকি।
লুকিয়ে সে কি রয় নি কোনোখানে।
কাহিনী তার থাকবে না আর বাকি
কোনো স্বপ্নে, কোনো গন্ধে গানে?
আরেক দিনের বনচ্ছায়ায় লিখা
ফিরবে না কি তাহার মরীচিকা।
অশ্রুতে তার আভাস দিবে নাকি
আরেক দিনের আঁখি।
নাহয় তাও লুপ্ত যদিই হয়,
তার লাগি শোক সেও তো সেই পথে।
এ জগতে সদাই ঘটে ক্ষয়,
ক্ষতি তবু হয় না কোনোমতে।
শুকিয়ে-পড়া পুষ্পদলের ধূলি
এ ধরণী যায় যদি বা ভুলি —
সেই ধুলারই বিস্মরণের কোলে
নতুন কুসুম দোলে।
আরও দেখুনঃ