সত্যরূপ কবিতাটি [ sotyorup kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বীথিকা কাব্যগ্রন্থের অংশ।
সত্যরূপ sotyorup
কাব্যগ্রন্থের নামঃ বীথিকা
কবিতার নামঃ সত্যরূপ sotyorup
সত্যরূপ কবিতা | sotyorup kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অন্ধকারে জানি না কে এল কোথা হতে–
মনে হল তুমি;
রাতের লতা-বিতান তারার আলোতে
উঠিল কুসুমি।
সাক্ষ্য আর কিছু নাই, আছে শুধু একটি স্বাক্ষর,
প্রভাত-আলোক তলে মগ্ন হলে প্রসুপ্ত প্রহর
পড়িব তখন।
ততক্ষণ পূর্ণ করি থাক মোর নিস্তব্ধ অন্তর
তোমার স্মরণ।
কত লোক ভিড় করে জীবনের পথে
উড়াইয়া ধূলি;
কত যে পতাকা ওড়ে কত রাজপথে
আকাশ আকুলি।
প্রহরে প্রহরে যাত্রী ধেয়ে চলে খেয়ার উদ্দেশে–
অতিথি আশ্রয় মাগে শ্রান্তদেহে মোর দ্বারে এসে
দিন-অবসানে,
দূরের কাহিনী বলে, তার পরে রজনীর শেষে
যায় দূর-পানে।
মায়ার আবর্তে রচে আসায় যাওয়ায়
চঞ্চল সংসারে।
ছায়ার তরঙ্গ যেন ধাইছে হাওয়ায়
ভাঁটায় জোয়ারে।
ঊর্ধ্বকণ্ঠে ডাকে কেহ, স্তব্ধ কেহ ঘরে এসে বসে–
প্রত্যহের জানাশোনা, তবু তারা দিবসে দিবসে
পরিচয়হীন।
এই কুজ্ঝটিকালোকে লুপ্ত হয়ে স্বপ্নের তামসে
কাটে জীর্ণ দিন।
সন্ধ্যার নৈঃশব্দ্য উঠে সহসা শিহরি;
না কহিয়া কথা
কখন যে আস কাছে, দাও ছিন্ন করি
মোর অস্পষ্টতা।
তখন বুঝিতে পারি, আছি আমি একান্তই আছি
মহাকালদেবতার অন্তরের অতি কাছাকাছি
মহেন্দ্রমন্দিরে;
জাগ্রত জীবনলক্ষ্মী পরায় আপন মাল্যগাছি
উন্নমিত শিরে।
তখনই বুঝিতে পারি, বিশ্বের মহিমা
উচ্ছ্বসিয়া উঠি
রাখিল সত্তায় মোর রচি নিজ সীমা
আপন দেউটি।
সৃষ্টির প্রাঙ্গণতলে চেতনার দীপশ্রেণী-মাঝে
সে দীপে জ্বলেছে শিখা উৎসবের ঘোষণার কাজে;
সেই তো বাগানে,
অনির্বচনীয় প্রেম অন্তহীন বিস্ময়ে বিরাজে
দেহে মনে প্রাণে।
আরও দেখুনঃ
- পাবনায় বাড়ি হবে pabnay bari hobe [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- স্বপ্ন হঠাৎ উঠল রাতে swopno hothat uthlo rate [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- হাজারিবাগের ঝোপে হাজারটা হাই hajaribager hate hajarta hai [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- নাম তার চিনুলাল nam tar chinulal [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- বশীরহাটেতে বাড়ি boshirhatete bari [ কবিতা ] -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর