হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ]
– রবী-ন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ : শ্যামলী [ ১৯৩৬ ]
কবি-তার শিরোনামঃ হঠাৎ দেখা
![হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 2 হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2021/12/Rabindranath-Tagore-31-300x225.jpg)
হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রেলগাড়ির কামরায় হ-ঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
দালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
![হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 3 হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2021/12/Rabindranath-Tagore-29-300x279.jpg)
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।
হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।
সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
![হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 4 হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2021/12/Rabindranath-Tagore-35-216x300.jpg)
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
![হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 5 হঠাৎ দেখা hothat dekha [ কবিতা ] - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর](http://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2021/12/Rabindranath-Tagore-28-215x300.jpg)
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললেম, “বলব।”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”
খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, “থাক্, এখন যাও ও দিকে।”
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।
অনাহত onahoto [ কবি-তা ] -রবী-ন্দ্রনাথ ঠাকুর
নব বৎসরে করিলাম পণ naba batsare karilam pon [ কবি-তা ] – রবী-ন্দ্রনাথ ঠাকুর