“কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি (১৯১০) কাব্যগ্রন্থের একটি গভীর দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক কবিতা। এখানে কবি এক রহস্যময়, প্রেমময় এবং ত্যাগী সত্তার প্রতি সম্বোধন করেছেন—যিনি অকূল সংসারে প্রেম, সাধনা ও আত্মত্যাগের আলো নিয়ে এসেছেন। কবিতাটি মানবজীবনের মহৎ আহ্বান, অনন্ত আনন্দের সন্ধান এবং আত্মার অবিনশ্বরতার প্রতীক।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
-
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
কাব্যগ্রন্থ: গীতাঞ্জলি (১৯১০)
-
কবিতার নাম: কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ
-
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: আধ্যাত্মিকতা, জীবনদর্শন, প্রেম ও ত্যাগ
কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ – কবিতার পাঠ
কোন্ আলোতে প্রাণের প্রদীপ
জ্বালিয়ে তুমি ধরায় আস।
সাধক ওগো, প্রেমিক ওগো,
পাগল ওগো, ধরায় আস।
এই অকুল সংসারে
দুঃখ-আঘাত তোমার প্রাণে বীণা ঝংকারে।
ঘোরবিপদ-মাঝে
কোন্ জননীর মুখের হাসি দেখিয়া হাস।
তুমি কাহার সন্ধানে
সকল সুখে আগুন জ্বেলে বেড়াও কে জানে।
এমন ব্যাকুল করে
কে তোমারে কাঁদায় যারে ভালোবাস।
তোমার ভাবনা কিছু নাই–
কে যে তোমার সাথের সাথি ভাবি মনে তাই।
তুমি মরণ ভুলে
কোন্ অনন্ত প্রাণসাগরে আনন্দে ভাস।
ভাবার্থ
কবি এখানে এমন এক আধ্যাত্মিক সত্তার কথা বলেছেন যিনি জীবনের অন্ধকারে প্রেম ও ত্যাগের আলো জ্বেলে এসেছেন। এই সত্তা দুঃখ ও বিপদের মধ্যেও হাসি দিয়ে এগিয়ে চলেন, জীবনের সব সুখকে বিসর্জন দিয়ে মহত্তর লক্ষ্য অনুসন্ধান করেন। তিনি মৃত্যুকে ভুলে অনন্ত জীবনের আনন্দসাগরে নিমগ্ন। কবিতাটি আত্মত্যাগ, প্রেম ও অনন্তের আনন্দের এক অনুপম প্রতিচ্ছবি।
শব্দার্থ
-
প্রাণের প্রদীপ: জীবনের আলো, আত্মার জ্যোতি
-
অকুল সংসার: সীমাহীন দুঃখ-ক্লেশে ভরা পৃথিবী
-
প্রাণসাগর: জীবনের অনন্ত উৎস বা আধ্যাত্মিক আনন্দের প্রতীক