গীতালি,১৯১৫ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গীতালি হল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কর্ত্তৃক রচিত একটি বাংলা কাব্যগ্রন্থ। এটি ১৯১৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়।এটি রবীন্দ্রনাথের কাব্য রচনার “গীতাঞ্জলি পর্ব”-এর অন্তর্গত একটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ গীতিমাল্যের ষোলটি কবিতা গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ সং অফারিংসে অন্তর্ভুক্ত করেছেন .

রবীন্দ্রনাথের “গীতিমাল্য” কাব্যে ঐশ্বরিক প্রেম ও চেতনা প্রকাশ পেয়েছে। এতে ক্ষুদ্র আমি হতে বৃহৎ সত্তা তথা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবার তীব্র আকুতির উপস্থিতি রয়েছে।

গীতালি কবিতা সূচি:

 

গীতালি,১৯১৫ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

আশীর্বাদ

দুঃখের বরষায়

তুমি আড়াল পেলে কেমনে

বাঁধা দিলে বাধবে লড়াই

আমি হৃদয়েতে পথ কেটেছি

আলো যে

ও নিঠুর, আরো কি বাণ

সুখে আমায় রাখবে কেন

ওগো আমার প্রাণের ঠাকুর

আঘাত করে নিলে জিনে

ঘুম কেন নেই তোরি চোখে

আমি যে আর সইতে পারি নে

পথ চেয়ে যে কেটে গেল

আবার শ্রাবণ হয়ে এলে ফিরে

আমার সকল রসের ধারা

এই শরৎ-আলোর কমল-বনে

তোমার মোহন রূপে

যখন তুমি বাঁধছিলে তার

আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে

হৃদয় আমার প্রকাশ হল

এক হাতে ওর কৃপাণ আছে

পথ দিয়ে কে যায় গো চলে

এই যে কালো মাটির বাসা

যে থাকে থাক্‌-না দ্বারে

তোমার খোলা হাওয়া লাগিয়ে পালে

শুধু তোমার বাণী নয় গো

শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি

 

গীতালি,১৯১৫ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

ও আমার মন যখন জাগলি না রে

মোর মরণে তোমার হবে জয়

এবার আমায় ডাকলে দূরে

নাই কি রে তীর

নাই বা ডাক

না বাঁচাবে আমায় যদি

যেতে যেতে একলা পথে

মালা হতে খসে-পড়া

কোন্‌ বরতা পাঠালে মোর পরানে

যেতে যেতে চায় না যেতে

সেই তো আমি চাই

শেষ নাহি যে

না রে, তোদের ফিরতে দেব না রে

মনকে হেথায় বসিয়ে রাখিস নে

এতটুকু আঁধার যদি

কাঁচা ধানের ক্ষেতে যেমন

দুঃখ যদি না পাবে তো

না রে, না রে, হবে না তোর স্বর্গসাধন

তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে

না গো, এই যে ধুলা আমার না এ

এই কথাটা ধরে রাখিস

লক্ষ্মী যখন আসবে তখন

ওই অমল হাতে রজনী প্রাতে

মোর হৃদয়ের গোপন বিজন ঘরে

খুশি হ তুই আপন মনে

সহজ হবি সহজ হবি

ওরে ভীরু তোমার হাতে

চোখে দেখিস, প্রাণে কানা

অগ্নিবীণা বাজাও তুমি

আলো যে আজ গান করে মোর প্রাণে গো

 

গীতালি,১৯১৫ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

তোমার দুয়ার খোলার ধ্বনি

প্রেমের প্রাণে সইবে কেমন করে

ক্লান্তি আমার ক্ষমা করো প্রভু

আমার আর হবে না দেরি

ওই-যে সন্ধ্যা খুলিয়া ফেলিল তার

দুঃখ এ নয়, সুখ নহে গো

এদের পানে তাকাই আমি

হিসাব আমার মিলবে না তা জানি

মেঘ বলেছে ‘যাব যাব’

কাণ্ডারী গো,যদি এবার

ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে

তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে

তোমার কাছে এ বর মাগি

আপন হতে বাহির হয়ে

এই আবরণ ক্ষয় হবে গো

ওগো আমার হৃদয়বাসী

পুষ্প দিয়ে মার যারে

আমার সুরের সাধন রইল পড়ে

কূল থেকে মোর গানের তরী

ঘরের থেকে এনেছিলেম

সন্ধ্যা হল, একলা আছি ব’লে

বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতেছ

তোমায় সৃষ্টি করব আমি

সারা জীবন দিল আলো

সরিয়ে দিয়ে আমার ঘুমের

ব্যথার বেশে এল আমার দ্বারে

আমি পথিক, পথ আমারি সাথি

বৃন্ত হতে ছিন্ন করি শুভ্র কমলগুলি

বাজিয়েছিলে বীণা তোমার

আবার যদি ইচ্ছা কর

অচেনাকে ভয় কী আমার ওরে

যে দিল ঝাঁপ ভবসাগর-মাঝখানে

সন্ধ্যাতারা যে ফুল দিল

এ দিন আজি কোন্‌ ঘরে গো

তোমার কাছে চাই নে আমি

এখানে তো বাঁধা পথের

যা দেবে তা দেবে তুমি আপন হাতে

পথে পথেই বাসা বাঁধি

পান্থ তুমি, পান্থজনের সখা হে

জীবন আমার যে অমৃত

সুখের মাঝে তোমায় দেখেছি

পথের সাথি, নমি বারম্বার

অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো

গতি আমার এসে

ভেঙেছে দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়

তোমায় ছেড়ে দূরে চলার

যখন তোমায় আঘাত করি

কেমন করে তড়িৎ-আলোয়

এই নিমেষে গণনাহীন

যাস নে কোথাও ধেয়ে

মুদিত আলোর কমল-কলিকাটিরে

এই তীর্থ-দেবতার ধরণীর মন্দির-প্রাঙ্গণে

কেমন করে এমন বাধা ক্ষয় হবে

জাগো নির্মল নেত্রে

প্রভু আমার, প্রিয় আমার, পরমধন হে

তব গানের সুরে

আজি নির্ভয়নিদ্রিত ভুবনে

আমি অধম অবিশ্বাসী

যদি আমায় তুমি বাঁচাও তবে

বলো, আমার সনে তোমার কী শত্রুতা

দুঃখ যে তোর নয় রে চিরন্তন

আমার বোঝা এতই করি ভারী

 

 

গীতালি,১৯১৫ | কাব্যগ্রন্থ | কবিতা সূচি | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

 

আরও পড়ুন:

মন্তব্য করুন