তখন নিশীথ রাত্রি; গেলে ঘর হতে । স্মরণ । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । Tokhon Nishith Ratri Gele Ghor Hote

তখন নিশীথ রাত্রি; গেলে ঘর হতে [Tokhon Nishith Ratri Gele Ghor Hote] কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণ (১৯৬১) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এই কাব্যে কবি গভীর বেদনা, প্রিয়জন হারানোর শূন্যতা এবং আত্মিক সংযোগের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন। কবিতাটিতে নিশীথের নিস্তব্ধতার পটভূমিতে চলে যাওয়া এক প্রিয়জনকে স্মরণ করা হয়েছে—যার বিদায় ছিল নীরব, কিন্তু স্মৃতিতে রেখে গেছে অবিনাশী অনুরণন। এটি মৃত্যু ও জীবনের সীমারেখায় দাঁড়িয়ে থাকা ভালোবাসা ও অভাববোধের এক গভীর কাব্যময় দলিল।

কবিতার মৌলিক তথ্য

  • কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • কাব্যগ্রন্থ: স্মরণ

  • কবিতার নাম: তখন নিশীথ রাত্রি; গেলে ঘর হতে

  • প্রকাশকাল: ১৯৬১

  • বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: শোক, স্মৃতি, প্রেম, মৃত্যু

 

তখন নিশীথ রাত্রি; গেলে ঘর হতে – কবিতার পাঠ

তখন নিশীথ রাত্রি; গেলে ঘর হতে

যে পথে চল নি কভু সে অজানা পথে।

যাবার বেলায় কোনো বলিলে না কথা,

লইয়া গেলে না কারো বিদায়বারতা।

সুপ্তিমগ্ন বিশ্ব-মাঝে বাহিরিলে একা–

অন্ধকারে খুঁজিলাম, না পেলাম দেখা।

মঙ্গলমুরতি সেই চিরপরিচিত

অগণ্য তারার মাঝে কোথায় অন্তর্হিত!

গেলে যদি একেবারে গেলে রিক্ত হাতে?

এ ঘর হইতে কিছু নিলে না কি সাথে?

বিশ বৎসরের তব সুখদুঃখভার

ফেলে রেখে দিয়ে গেলে কোলেতে আমার!

প্রতিদিবসের প্রেমে কতদিন ধরে

যে ঘর বাঁধিলে তুমি সুমঙ্গল-করে

পরিপূর্ণ করি তারে স্নেহের সঞ্চয়ে,

আজ তুমি চলে গেলে কিছু নাহি লয়ে?

তোমার সংসার-মাঝে, হায়, তোমা-হীন

এখনো আসিবে কত সুদিন-দুর্দিন–

তখন এ শূন্য ঘরে চিরাভ্যাস-টানে

তোমারে খুঁজিতে এসে চাব কার পানে?

আজ শুধু এক প্রশ্ন মোর মনে জাগে–

হে কল্যাণী, গেলে যদি, গেলে মোর আগে,

মোর লাগি কোথাও কি দুটি স্নিগ্ধ করে

রাখিবে পাতিয়া শয্যা চিরসন্ধ্যা-তরে?

মন্তব্য করুন