তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে (Tomar Bhubon Morme Amar Lage) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতালি (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থের একটি গভীর অনুভূতিপূর্ণ কবিতা। কবিতায় প্রকৃতি, অনন্ত আকাশ, এবং মানবমনের অনুরণন মিলেমিশে এক অনবদ্য কাব্যিক রূপ পেয়েছে। এখানে কবি আকাশ, সবুজ, নীল এবং শরতের আলোকে নিজের অন্তরের সাথে একাত্ম করেছেন।
Table of Contents
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: গীতালি (১৯১৪)
কবিতার নাম: তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে
প্রকাশকাল: ১৯১৪
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: প্রকৃতিচিত্র ও আধ্যাত্মিক অনুভূতি
তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে – কবিতার পাঠ
তোমার ভুবন মর্মে আমার লাগে।
তোমার আকাশ অসীম কমল
অন্তরে মোর জাগে।
এই সবুজ এই নীলের পরশ
সকল দেহ করে সরস—
রক্ত আমার রঙিয়ে আছে
তব অরুণরাগে।
আমার মনে এই শরতের
আকুল আলোখানি
এক পলকে আনে যেন
বহুযুগের বাণী।
নিশীথরাতে নিমেষহারা
তোমার যত নীরব তারা
এমন ক’রে হৃদয়দ্বারে
আমায় কেন মাগে।
ভাবার্থ
কবিতায় কবি প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের মধ্যে ঈশ্বরের অনন্ত রূপ অনুভব করেছেন। নীল আকাশ, সবুজ ধরিত্রী ও শরতের সোনালি আলো তার অন্তরে আনন্দ, প্রেম ও চিরন্তন বাণীর অনুরণন সৃষ্টি করে। নিশীথরাতের নীরব তারা যেন কবির হৃদয়ে আধ্যাত্মিক টান জাগিয়ে তোলে।
শব্দার্থ
কমল: পদ্মফুল, এখানে বিশুদ্ধ সৌন্দর্যের প্রতীক।
অরুণরাগ: সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের লালাভ আভা।
আকুল আলোখানি: উদ্দীপনা ও আবেগময় আলো।
নিশীথ: গভীর রাত্রি।
নিমেষহারা: ক্ষণহীন, অবিরাম।