ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে কবিতা । গীতালি । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । Phul To Amar Phuriye Gechhe

ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে (Phul To Amar Phuriye Gechhe) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতালি (১৯১৪) কাব্যগ্রন্থের একটি ভক্তিমূলক কবিতা। এখানে কবি জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে ঈশ্বরের কাছে নিজের সমস্ত অনুভূতি, শক্তি, দুঃখ, ভয়, এবং অভিমান সমর্পণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কবিতাটি গভীর আত্মসমর্পণ, ভক্তি এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণ।

কবিতার মৌলিক তথ্য

  • কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  • কাব্যগ্রন্থ: গীতালি (১৯১৪)

  • কবিতার নাম: ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে

  • প্রকাশকাল: ১৯১৪

  • বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: ভক্তিমূলক ও আত্মসমর্পণমূলক কবিতা

 

ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে – কবিতার পাঠ

ফুল তো আমার ফুরিয়ে গেছে,
শেষ হল মোর গান—
এবার প্রভু, লও গো শেষের দান।

অশ্রুজলের পদ্মখানি
চরণতলে দিলাম আনি—
ওই হাতে মোর হাত দুটি লও,
লও গো আমার প্রাণ।
এবার প্রভু, লও গো শেষের দান।

ঘুচিয়ে লও গো সকল লজ্জা,
চুকিয়ে লও গো ভয়।
বিরোধ আমার যত আছে
সব করে লও জয়।
লও গো আমার নিশীথরাতি,
লও গো আমার ঘরের বাতি,
লও গো আমার সকল শক্তি—
সকল অভিমান।
এবার প্রভু, লও গো শেষের দান।

ভাবার্থ

কবিতায় কবি জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে নিজের সমস্ত সৃজনশীলতা ও শক্তি ক্ষয় হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি ঈশ্বরের কাছে ভক্তিভরে নিজের অশ্রু, লজ্জা, ভয়, বিরোধ, নিশীথরাতি, ঘরের বাতি, শক্তি ও অভিমান উৎসর্গ করতে চেয়েছেন। এটি এক গভীর আত্মসমর্পণের কবিতা, যেখানে কবি মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

শব্দার্থ

  • ফুল ফুরিয়ে গেছে: সৃজনশীলতা ও আনন্দ নিঃশেষ হয়ে যাওয়া।

  • শেষের দান: জীবনের সর্বশেষ সমর্পণ।

  • অশ্রুজল: দুঃখ ও আবেগের প্রতীক।

  • পদ্মখানি: এখানে পবিত্র ও ভক্তিমূলক উপহার বোঝানো হয়েছে।

  • নিশীথরাতি: গভীর রাত্রি, জীবনের অন্তিম সময়ের প্রতীক।

মন্তব্য করুন