ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কাব্যগ্রন্থ : কল্পনা [ ১৯৫২ ]

কবিতার শিরোনামঃ ভ্রষ্ট লগ্ন

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শয়নশিয়রে প্রদীপ নিবেছে সবে,

জাগিয়া উঠেছি ভোরের কোকিলরবে।

অলসচরণে বসি বাতায়নে এসে

নূতন মালিকা পরেছি শিথিল কেশে।

এমন সময়ে অরুণধূসর পথে

তরুণ পথিক দেখা দিল রাজরথে।

সোনার মুকুটে পড়েছে উষার আলো,

মুকুতার মালা গলায় সেজেছে ভালো।

শুধালো কাতরে “সে কোথায়! সে কোথায়!’

     ব্যগ্রচরণে আমারি দুয়ারে নামি–

শরমে মরিয়া বলিতে নারিনু হায়,

     “নবীন পথিক, সে যে আমি, সেই আমি!’

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গোধূলিবেলায় তখনো জ্বলে নি দীপ,

পরিতেছিলাম কপালে সোনার টিপ–

কনকমুকুর হাতে লয়ে বাতায়নে

বাঁধিতেছিলাম কবরী আপনমনে।

হেনকালে এল সন্ধ্যাধূসর পথে

করুণনয়ন তরুণ পথিক রথে।

ফেনায় ঘর্মে আকুল অশ্বগুলি

বসনে ভূষণে ভরিয়া গিয়াছে ধূলি।

শুধালো কাতরে “সে কোথায়! সে কোথায়!’

     ক্লান্ত চরণে আমারি দুয়ারে নামি–

শরমে মরিয়া বলিতে নারিনু হায়,

     “শ্রান্ত পথিক, সে যে আমি, সেই আমি!’

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ফাগুন যামিনী, প্রদীপ জ্বলিছে ঘরে,

দখিন বাতাস মরিছে বুকের ‘পরে।

সোনার খাঁচায় ঘুমায় মুখরা সারী,

দুয়ার-সমুখে ঘুমায়ে পড়েছে দ্বারী।

ধূপের ধোঁয়ায় ধূসর বাসরগেহ,

অগুরুগন্ধে আকুল সকল দেহ,

ময়ূরকণ্ঠী পরেছি কাঁচলখানি

দূর্বাশ্যামল আঁচল বক্ষে টানি,

রয়েছি বিজন রাজপথপানে চাহি,

     বাতায়নতলে বসেছি ধূলায় নামি–

ত্রিযামা যামিনী একা বসে গান গাহি,

     “হতাশ পথিক, সে যে আমি, সেই আমি।’

ভ্রষ্ট লগ্ন bhroshto logno [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিচারক bicharak [ কবিতা ]- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আরও পড়ুনঃ

অনবচ্ছিন্ন আমি onochchhino ami [ কবিতা ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মন্তব্য করুন