“যতদিন কাছে ছিলে, বলো, কী উপায়ে” রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষ দিকের কাব্যগ্রন্থ স্মরণ (১৯৬১)–এর একটি আবেগময় ও স্মৃতিমেদুর কবিতা। এতে কবি প্রিয়জনের অন্তর্ধানের পর তাকে নতুনভাবে আবিষ্কারের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেছেন। কাছাকাছি থাকা অবস্থায় যিনি নীরবে, অন্তরালে নিজের কর্তব্য সম্পাদন করেছেন, তার প্রকৃত রূপ কবির কাছে প্রকাশ পায় বিদায়ের পর। এই কবিতায় গভীর কৃতজ্ঞতা, শ্রদ্ধা এবং শোকের সঙ্গে মিশে আছে চিরস্থায়ী স্মৃতির অঙ্গীকার।
কবিতার মৌলিক তথ্য
কাব্যগ্রন্থ: স্মরণ
প্রকাশকাল: ১৯৬১
কবিতার নাম: যতদিন কাছে ছিলে, বলো, কী উপায়ে
বিষয়বস্তু: প্রিয়জনের নীরব অবদান ও অন্তর্ধানের পর তার প্রকৃত রূপ উপলব্ধি
ধারা: স্মৃতিচারণ ও শোককাব্য
কবিতা – যতদিন কাছে ছিলে, বলো, কী উপায়ে
যতদিন কাছে ছিলে ব লো কীউপায়ে
আপনারে রেখেছিলে এমন লুকায়ে?
ছিলে তুমি আপনার কর্মের পশ্চাতে
অন্তর্যামী বিধাতার চোখের সাক্ষাতে।
প্রতি দণ্ড-মুহূর্তের অন্তরাল দিয়া
নিঃশব্দে চলিয়া গেছ নম্র-নত-হিয়া।
আপন সংসারখানি করিয়া প্রকাশ
আপনি ধরিয়াছিলে কী অজ্ঞাত বাস!
আজি যবে চলি গেলে খুলিয়া দুয়ার
পরিপূর্ণ রূপখানি দেখালে তোমার।
জীবনের সব দিন সব খণ্ড কাজ
ছিন্ন হয়ে পদতলে পড়ি গেল আজ।
তব দৃষ্টিখানি আজি বহে চিরদিন
চির-জনমের দেখা পলকবিহীন।