গরবিনী কবিতা | gorobini kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গরবিনী কবিতাটি [ gorobini kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বীথিকা-কাব্যগ্রন্থের অংশ।

গরবিনী gorobini

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 

কাব্যগ্রন্থের নামঃ বীথিকা

কবিতার নামঃ গরবিনী gorobini

 

গরবিনী কবিতা | gorobini kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর [ Rabindranath Tagore ]

গরবিনী কবিতা | gorobini kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

কে গো তুমি গরবিনী, সাবধানে থাকো দূরে দূরে,

মর্তধূলি-‘পরে ঘৃণা বাজে তব নূপুরে নূপুরে।

     তুমি যে অসাধারণ, তীব্র একা তুমি,

          আকাশকুসুমসম অসংসক্ত রয়েছ কুসুমি।

              বাহিরের প্রসাধনে যত্ন তুমি শুচি;

                  অকলঙ্ক তোমার কৃত্রিম রুচি;

         সর্বদা সংশয়ে থাকো পাছে কোথা হতে

হতভাগ্য কালো কীট পড়ে তব দীপের আলোতে

                   স্ফটিকেতে-ঢাকা

                 অসামান্য সমাদরে আঁকা

                   তোমার জীবন

          কৃপণের-কক্ষে-রাখা ছবির মতন

                   বহুমূল্য যবনিকা অন্তরালে;

ওগো অভাগিনী নারী, এই ছিল তোমার কপালে–

     আপন প্রহরী তুমি, নিজে তুমি আপন বন্ধন।

                   আমি সাধারণ।

                   এ ধরাতলের

                             নির্বিচার স্পর্শ সকলের

                   দেহে মোর বহে যায়, লাগে মোর মনে–

               সেই বলে বলী আমি, স্বত্ব মোর সকল ভুবনে।

 

গরবিনী কবিতা | gorobini kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

 

                             মুক্ত আমি ধূলিতলে,

                        মুক্ত আমি অনাদৃত মলিনের দলে।

          যত চিহ্ন লাগে দেহে, অশঙ্কিত প্রাণের শক্তিতে

                           শুদ্ধ হয়ে যায় সে চকিতে।

                   সম্মুখে আমার দেখো শালবন,

                        সে যে সাধারণ।

                   সবার একান্ত কাছে

                        আপনাবিস্মৃত হয়ে আছে।

                             মধ্যাহ্নবাতাসে

               শুষ্ক পাতা ঘুরাইয়া ধূলির আবর্ত ছুটে আসে–

                   শাখা তার অনায়াসে দেয় নাড়া,

               পাতায় পাতায় তার কৌতুকের পড়ে সাড়া।

                   তবু সে অম্লান শুচি, নির্মল নিশ্বাসে

                             চৈত্রের আকাশে

                   বাতাস পবিত্র করে সুগন্ধবীজনে।

                  অসংকোচ ছায়া তার প্রসারিত সর্বসাধারণে।

                        সহজে নির্মল সে যে

                   দ্বিধাহীন জীবনের তেজে।

                             আমি সাধারণ।

                        তরুর মতন আমি, নদীর মতন।

                            মাটির বুকের কাছে থাকি;

                         আলোরে ললাটে লই ডাকি

                             যে আলোক উচ্চনীচ ইতরের–

                                  বাহিরের ভিতরের।

          সমস্ত পৃথিবী তুমি অবজ্ঞায় করেছ অশুচি,

                   গরবিনী, তাই সেই শক্তি গেছে ঘুচি

          আপনার অন্তরে রহিতে অমলিনা–

                   হায়, তুমি, নিখিলের আশীর্বাদহীনা।

আরও দেখুনঃ 

Amar Rabindranath Logo

মন্তব্য করুন