নব পরিচয় কবিতাটি [ nobo porichoy-kobita ] কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বীথিকা-কাব্যগ্রন্থের অংশ।
নব পরিচয় nobo porichoy
-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থের নামঃ বীথিকা
কবিতার নামঃ নব পরিচয় nobo porichoy

নব পরিচয় কবিতা | nobo porichoy kobita | বীথিকা কাব্যগ্রন্থ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
জন্ম মোর বহি যবে
খেয়ার তরী এল ভবে
যে-আমি এল সে-তরীখানি বেয়ে,
ভাবিয়াছিনু বারে বারে
প্রথম হতে জানি তারে,
পরিচিত সে পুরানো সবচেয়ে।
হঠাৎ যবে হেনকালে
আবেশকুহেলিকাজালে
অরুণরেখা ছিদ্র দেয় আনি
আমার নব পরিচয়
চমকি উঠে মনোময়–
নূতন সে যে, নূতন তারে জানি।
বসন্তের ভরাস্রোতে
এসেছিল সে কোথা হতে
বহিয়া চিরযৌবনেরই ডালি।
অনন্তের হোমানলে
যে-যজ্ঞের শিখা জ্বলে,
সে-শিখা হতে এনেছে দীপ জ্বালি।

মিলিয়া যায় তারই সাথে
আশ্বিনেরই নবপ্রাতে
শিউলিবনে আলোটি যাহা পড়ে,
শব্দহীন কলরোলে
সে-নাচ তারই বুকে দোলে
যে-নাচ লাগে বৈশাখের ঝড়ে।
এ-সংসারে সব সীমা
ছাড়ায়ে গেছে যে-মহিমা
ব্যাপিয়া আছে অতীতে অনাগতে,
মরণ করি অভিভব
আছেন চির যে-মানব
নিজেরে দেখি সে-পথিকের পথে।
সংসারের ঢেউখেলা
সহজে করি অবহেলা
রাজহংস চলেছে যেন ভেসে–
সিক্ত নাহি করে তারে,
মুক্ত রাখে পাখাটারে,
ঊর্ধ্বশিরে পড়িছে আলো এসে।
আনন্দিত মন আজি
কী সংগীতে উঠে বাজি,
বিশ্ববীণা পেয়েছি যেন বুকে।
সকল লাভ, সকল ক্ষতি,
তুচ্ছ আজি হল অতি
দুঃখ সুখ ভুলে যাওয়ার সুখে।
আরও দেখুনঃ

