প্রেম এসেছিল, চলে গেল সে যে খুলি দ্বার [Prem Eshchhilo Chole Gelo Se Je Khuli Dwar] কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মরণ (১৯৬১) কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এই কাব্যগ্রন্থে কবি মৃত্যু, বিদায়, স্মৃতি ও জীবনের চূড়ান্ত গন্তব্য নিয়ে গভীর চিন্তন করেছেন। কবিতাটিতে প্রেমের আগমন ও প্রস্থান, এবং মৃত্যুকে ‘শেষ অতিথি’ হিসেবে বরণ করার প্রস্তুতির কথা এক গম্ভীর অথচ শান্ত স্বরে প্রকাশ পেয়েছে। জীবনের অস্থায়ী আনন্দ ও চিরন্তন বিদায়ের সত্যকে কবি এখানে দার্শনিক বোধ ও কাব্যিক ভাষায় উপস্থাপন করেছেন।
কবিতার মৌলিক তথ্য
কবি: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কাব্যগ্রন্থ: স্মরণ
কবিতার নাম: প্রেম এসেছিল, চলে গেল সে যে খুলি দ্বার
প্রকাশকাল: ১৯৬১
বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি: প্রেম, মৃত্যু, বিদায়, দার্শনিক চিন্তা
প্রেম এসেছিল, চলে গেল সে যে খুলি দ্বার – কবিতার পাঠ
প্রেমএসেছিল, চলে গেল সে যে খুলি দ্বার–
আর কভু আসিবে না।
বাকি আছে শুধু আরেক অতিথি আসিবার,
তারি সাথে শেষ চেনা।
সে আসি প্রদীপ নিবাইয়া দিবে এক দিন,
তুলি লবে মোরে রথে–
নিয়ে যাবে মোরে গৃহ হতে কোন্ গৃহহীন
গ্রহতারকার পথে।
ততকাল আমি একা বসি রব খুলি দ্বার,
কাজ করি লব শেষ।
দিন হবে যবে আরেক অতিথি আসিবার
পাবে না সে বাধালেশ।
পূজা-আয়োজন সব সারা হবে একদিন,
প্রস্তুত হয়ে রব–
নীরবে বাড়ায়ে বাহু-দুটি সেই গৃহহীন
অতিথিরে বরি লব।
যে জন আজিকে ছেড়ে চলে গেল খুলি দ্বার
সেই বলে গেল ডাকি,
“মোছো আঁখিজল, আরেক অতিথি আসিবার
এখনো রয়েছে বাকি।’
সেই বলে গেল, “গাঁথা সেরে নিয়ো একদিন
জীবনের কাঁটা বাছি,
নবগৃহ-মাঝে বহি এনো, তুমি গৃহহীন,
পূর্ণ মালিকাগাছি।’