আনন্দ গান উঠুক তবে বাজি [ Anandagan uthuk tabe baji ] গানটি রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্বের গান। পূজা পর্বের গানগুলোর কথা ও সুরে ঈশ্বর প্রেম, শ্রদ্ধা বা স্মরণ বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে গানে গানে তিনি বন্ধন কাটার মনোজাগতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। সুরের গুরু বা সৃষ্টিকর্তার কাছে সুর বা পরম পুরুষের তর্পণের জন্য জ্ঞানকে প্রার্থনা করেছেন। মুক্তি খুঁজেছেন ঈশ্বর সৃষ্ট আলো, ধূলি ও ঘাসে। মনের ভেতর শুনেছেন তাঁর চরণধ্বনি যিনি দীনবন্ধু, চিরবন্ধু ও চিরশান্তির আশ্রয়স্থল। সব কাজ শেষ হলে তিনি নীরবে অথচ হাসি মুখেই ঈশ্বরের কাছে ফিরে যাবেন এ প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন আনন্দচিত্তে।
![আনন্দ গান উঠুক তবে বাজি, পূজা ৩০৯ [ Anandagan uthuk tabe baji ] 2 আনন্দ গান উঠুক তবে বাজি, পূজা ৩০৯ [ Anandagan uthuk tabe baji ]](https://amarrabindranath.com/wp-content/uploads/2022/05/1345416_Wallpaper2-300x225.jpeg)
আনন্দ গান উঠুক তবে বাজি, পূজা ৩০৯ [ Anandagan uthuk tabe baji ]
রাগ: বাহার-খাম্বাজ | তাল: দাদরা
রচনাকাল (বঙ্গাব্দ): ২৯ পৌষ, ১৩২১
রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ): ১৩ জানুয়ারি, ১৯১৫
রচনাস্থান: শান্তিনিকেতন থেকে কলকাতা যাবার পথে ট্রেনে
স্বরলিপিকার: অনাদিকুমার দস্তিদার
আনন্দ গান উঠুক তবে বাজি
আনন্দগান উঠুক তবে বাজি
এবার আমার ব্যথার বাঁশিতে।
অশ্রুজলের ঢেউয়ের ‘পরে আজি
পারের তরী থাকুক ভাসিতে ॥
যাবার হাওয়া ওই-যে উঠেছে, ওগো, ওই-যে উঠেছে,
সারারাত্রি চক্ষে আমার ঘুম যে ছুটেছে।
হৃদয় আমার উঠছে দুলে দুলে
অকূল জলের অট্টহাসিতে–
কে গো তুমি দাও দেখি তান তুলে
এবার আমার ব্যথার বাঁশিতে ॥
হে অজানা, অজানা সুর নব
বাজাও আমার ব্যথার বাঁশিতে,
হঠাৎ এবার উজান হাওয়ায় তব
পারের তরী থাক্-না ভাসিতে।
কোনো কালে হয় নি যারে দেখা, ওগো, তারি বিরহে
এমন করে ডাক দিয়েছে– ঘরে কে রহে!
বাসার আশা গিয়েছে মোর ঘুরে,
ঝাঁপ দিয়েছি আকাশরাশিতে
পাগল, তোমার সৃষ্টিছাড়া সুরে
তান দিয়ো মোর ব্যথার বাঁশিতে ॥
পূজা পর্বের গান নিয়ে আরও কিছু তথ্য:
পূজা অংশে ভক্তি-শ্রদ্ধাপূর্ণ পঙ্ক্তিগুলোকে রবীন্দ্রনাথ সব সুরের অধিকারী মহান স্রষ্টাকে বিশ্বলোকের রাগীনিরূপে অর্ঘ্য দিয়েছেন। এখানে ৬২৯টি গান স্বতন্ত্র একুশটি রকমে যথা বন্ধ, প্রার্থনা, বিরহ, দুঃখ, আত্মবোধন প্রভৃতি নামেও বিভাজিত করা যায়। পরিণয়ের গানগুলোর মধ্যেও পূজারই প্রাধান্য দেখা যায়, যদিও সেখানে প্রেমও অচ্ছেদ্যরূপে বিদ্যমান। আর প্রকৃত অর্থে সঙ্গীতের নাম দেয়াও কঠিন। একদিকে যা পূজা অন্যদিকে সেটাই প্রেম। এরা এক বৃন্তে দুটি ফুল, সহযোগী ও আলিঙ্গনাবদ্ধ এবং সহমর্মীও বটে।
আরও পড়ুন: